গৃহকর্মীর বেশে বাসা-বাড়িতে ঢুকে চুরির ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। অনেক ক্ষেত্রে কথিত গৃহকর্মীর হাতে ঘটছে খুনের ঘটনাও। এমন অবস্থায় গৃহকর্মী নিয়োগে ১৪টি সুপারিশ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে প্রকাশ করা সুপারিশগুলো হলো- কাজের বুয়া ও কাজের লোক নিয়োগের আগে তার কাছ থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র, সদ্য তোলা রঙিন ছবি, শনাক্তকারী ব্যক্তি, ব্যক্তির পরিচয় ও তার জাতীয় পরিচয় পত্র নিতে হবে।

সব তথ্য নেওয়ার পর নিকটস্থ থানায় কাজের তাদের তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি তা নিজের কাছে রাখুন। এর ফলে সে অতীতে কোনো অপরাধ করে থাকলে পুলিশ তাকে সহজেই শনাক্ত করতে পারবে।

অতীতে সে কোথায় কাজ করেছে তার বিস্তারিত তথ্য নেওয়া ছাড়াও কাজ ছাড়ার কারণ জানার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে পূর্বের কাজের ঠিকানায় যোগাযোগ করে তার তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।

কাজের বুয়া ও কাজের লোকের পরিবারের তথ্য নিতে নেওয়ার পাশাপাশি তার স্থায়ী ঠিকানা ও পরিবারে কে কে আছে তা জানার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে তার স্থায়ী ঠিকানায় যোগাযোগ করে দেখতে হবে যে, সে আসলে ওই ঠিকানায় বসবাস করে কি না। এত কিছু খোঁজ খবর অনাবশ্যক মনে হতে পারে, কিন্তু সমস্যা সৃষ্টি হলে তখন আফসোস হতে পারে।

বর্তমানে ডিএমপি নগরীর সব মানুষের তথ্য সংরক্ষণে কাজ করছে। ডিএমপি কর্তৃক নির্ধারিত তথ্য ফরমে কাজের বুয়া ও কাজের লোকের তথ্য পূরণ করে থানায় জমা নিন।

কাজের বুয়া ও কাজের লোক নিয়োগের পরে তার গতিবিধি লক্ষ্য করার পাশাপাশি তার চালচলনে আপনি বুঝতে পারবেন সে আসলে কেমন ব্যক্তি।

বাসার মেইন গেটে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে পারেন, এতে করে আপনার বাসায় কোনো অপরিচিত লোকের আনাগোনা হচ্ছে কি না তা দেখা সহজ হবে। প্রয়োজনে ঘরের ভেতরেও সিসি ক্যামেরা লাগানো যেতে পারে। যাতে আপনার অনুপস্থিতিতেও কাজের বুয়ার কর্মকাণ্ড মনিটর করতে পারেন।

 

বাসায় মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা কাজের বুয়া ও কাজের লোকের অগোচরে রাখুন। আপনার লকারের চাবি সবসময় আপনার কাছে রাখার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে যে রুমে লকার ও আলমারি রয়েছে সে রুম আলাদাভাবে তালাবদ্ধ করে রাখুন।

কাজের বুয়া ও কাজের লোককে একা রেখে সবাই বাড়ি ছেড়ে যাবেন না। বাচ্চা রেখে গেলে সঙ্গে আরও একজনকে রাখুন। কোনো অবস্থাতেই বাচ্চাকে একা রেখে যাবেন না।

কাজের বুয়ার চাহিদা বুঝার চেষ্টা করুন। তাতে করে সে লোভী কি না জানতে সহজ হবে।

সন্দেহজনক কারোর সঙ্গে কাজের বুয়া মোবাইলে কথা বলে কি না অথবা তার কাছে সন্দেহজনক কেউ দেখা করতে আসে কি না এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখুন।

বাড়িতে গ্যাসের চুলা, ইলেক্ট্রিক যন্ত্রাংশ ব্যবহারে কাজের বুয়া ও কাজের লোক সতর্ক রয়েছে কি না লক্ষ্য করুন। অসতর্কতার ফলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

কাজের লোক ও বুয়াকে নিয়ে কোথাও ভ্রমণে গেলে সবসময় সঙ্গে সঙ্গেই রাখুন। সে হারিয়ে গেলে বা কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আপনাকেই বিড়ম্বনায় পড়তে হবে। আপনার বাসার কাজের লোক ও বুয়ার সঙ্গে মানবিক আচরণ করুন।

বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি আরো জানায়, সচেতনতাই রুখতে পারে কাজের বুয়া ও কাজের লোকের অপরাধের তত্পরতা। এদেরকে অতি বিশ্বাস না করাই শ্রেয়। তাদেরকে নজরদারিতে রাখতে হবে নিজেজের স্বার্থেই। এ ছাড়া যেকোনো প্রয়োজন ও সমস্যায় নিকটস্থ থানা বা ফাঁড়ি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়।